প্রকৃত ভালবাসা - রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প


গল্পঃ প্রকৃত ভালবাসা

প্রিয়া নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ে। নীরব উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে। সারাদিন দুষ্টামি করে বেড়ায়। দুষ্টামিতেই একদিন সে প্রিয়াকে প্রপোজ করে বসে। . প্রথমে প্রিয়া রাজি না হলেও পরে রাজি হয়ে যায়। নীরব সবসময় প্রিয়ার সাথে কোনো না কোনো রকম ফাজলামো ও পাগলমো করতো। প্রিয়া সেগুলোকে খুব উপভোগ করতো। . একটি মেয়ে যখন বুঝে সে তার প্রিয় ব্যক্তিটির হৃদয়ে রাজত্ব করছে। তখন মেয়েটি নিজেকে দুনিয়ার সবথেকে সুখী মনে করে। প্রিয়াও তাই অনুভব করত। . প্রিয়ার ভালবাসা নীরবকে দায়িত্বশীল করে তোলে। . নীরব ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ প্রিয়াকে নিয়ে একটি দুঃস্বপ্ন দেখে। যেখানে প্রিয়া আত্মহত্যা করে নীরবকে নিরবতায় ফেলে অজানা দেশে পাড়ি জমায়। সাথে সাথে চিতকার দিয়ে উঠে। . বাবা মা সবাই এসে জিজ্ঞেস করতে থাকে কি হয়েছে? নীরব বলল একটি দুঃস্বপ্ন দেখেছি আর কিছু না। . সবাই চলে যাবার পর নীরব প্রিয়াকে কল করে। কিন্তু পিক করছে না। নীরবের হার্ট বিট বেড়েই চলছে। চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠল। . বেশ কিছুক্ষণ পর কল রিসিভ করল প্রিয়া। ঘুমন্ত অবস্থায় বলল, কি হয়েছে বাবু! সাথে সাথেই ঝাড়ি দেয়া শুরু করল নীরব। কথাগুলো কান্না জড়িত হওয়ায় প্রিয়া কিচ্ছুই বুঝলো না। শুধু এইটুকুই বুঝলো যে নীরব কাদছে আর খুব ভয়ে পেয়ে আছে। . প্রিয়ার ঘুম হাওয়া হয়ে গেল। প্রিয় মানুষটিকে অস্থির দেখে কেউ ঘুমাতে পারে না। . কি হয়েছে বাবুটার? কাদছে কেন? কিছুটা অস্থিরতায় বলল প্রিয়া। নীরব বলল এতক্ষণ লাগে একটা কল ধরতে! আমি কতটা ভয় পেয়েছি জানো! প্রিয়া বলল,আরে বাবা, আমি তো ঘুম যাচ্ছিলাম। > আমি কালই দেখা করতে চাই। < আচ্ছা বাবু করব। কিন্তু কি হয়েছে সেটা তো বলবা, নাকি? > কাল বলব এখন ঘুমিয়ে পড় বাবুনিমনি। < ওকে। বাবুমশাই . কল কেটে ঘুমের সাথে যুদ্ধ শুরু করল নীরব। কিন্তু আসছে না। ওদিকে প্রিয়া জানালা দিয়ে আকাশের পানে তাকিয়ে মনে মনেই হাসছে আর বলছে, বড্ড পাগল একটা ছেলে নীরব। এই মাঝরাতেও সে তাকে নিয়েই চিন্তা করে। প্রিয়া নিজেকে অনেক সুখী ভাবছে। . সকালে পার্কে এসেই দেখে নীরব হাজির। প্রিয়া সামনে যেয়ে হাই বলার সাথে সাথেই নীরব প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে কাদতেঁ শুরু করে। .
< এই কি হচ্ছে এসব! বাচ্চাদের মত কাদছ কেন? নীরব কেদেই যাচ্ছে।
< ওকে তাহলে তুমি কাদতেঁ থাক। আমি গেলাম। নীরব চুপ হয়ে গেল। .
< কি হয়েছে খুলে বল তো। (প্রিয়া)
 > আগে তুমি কথা দাও, আমি যা বলব তুমি তা শুনবে। < আমি তোমার কোন কথাটা শুনি নাই সেটা বল তো? < আচ্ছা শুনো, তোমার জীবনে যত বড়ই তুফান আসুক না কেন আমাকে না বলে তুমি কোনো রকমের বড় সিদ্ধান্ত নিবে না। . প্রিয়া ভেবে পাচ্ছে না সে রাগবে না হাসবে। এই সামান্য কথার জন্য এতো কিছু! প্রিয়া বলল আচ্ছা বাবু ঠিক আছে। . একদিন প্রিয়া ভার্সিটি থেকে আসছিল। হঠাৎ কিছু বখাটেরা ছেলেরা গাড়িতে তুলে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। . প্রিয়ার হাসিমাখা জীবনটা নিমিষেই মলিন হয়ে যায়। অসহ্য লাগছে এই পৃথিবী তার কাছে। না আর পারছে না। এবার একটু মুক্তি চায়। . কিন্তু নীরবকে দেয়া কথার জন্য কিছু করতে পারছে না। . প্রিয়া তার এই কলংকিত জীবনের সাথে নীরবকে জড়াতে চায় না। তাই প্রিয়ারবের সাথে দেখা করে ব্রেকআপ করতে চায়। . নীরব বিশ্বাসই করতে পারল না। যে মেয়ে তাকে ছাড়া একমুহুর্ত থাকতে পারত না। আজ সেই মেয়েই সম্পর্ক নষ্ট করছে? . নীরব প্রিয়ার হাত ধরে বলে, আজ যদি তুমি আমাকে একা রেখে চলে যাও। তবে আমি আমার জীবন শেষ করে দিব। . প্রিয়া কথাগুলো শুনে কাদছে। নীরব বলল, কি হয়েছে প্লিজ একবার বল। প্রিয়া নীরবকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগল। . প্রিয়া সব খুলে বলে দিয়ে বলতে লাগল, এইজন্যই আমি তোমাকে আমার এই কলংকিত জীবনের সাথে জড়াতে চাইনি। . কথাগুলো শুনে নীরব প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে কেদে কেদে বলতে লাগল, এখানে তোমার দোষ কোথায়? দোষ ওদের। আর ওরা তার শাস্তি পাবে। আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমার শরীরকে নয়। আমি তোমাকে আমার পাশে আজীবন চাই। তুমি আমার শুধুই আমার। . প্রিয়াও কাদতে লাগল। তবে সুখের কান্না। প্রিয় মানুষটি যখন এমন হয়। তখন সব মেয়েরাই সুখ কাদে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ